সোমবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২১

The City of Millions

 The City of Millions

A. A. M. Rownak Shahriar Ruhan

#12001009

[This poem was published in Notre Dame College, Dhaka's Yearly (2020's) Magazine "Blue & Gold" as English Cover poem.]

I, with you ply across the city

whenever and whenever you want.

I, with you run from scorching to pouring

to stand with three for my owner

I am "Rickshaw" and this is my city.


The peace from the Almighty, I bring to you.

Blessings and the prayer hold me

Come to enter into entire

I am "Masjid" and this is my city.


I contain the legacy

the legacy of this city

From nawab to you,

With my architecture I tied the time

I am "Ahsan manjil" and this is my city.


I'm blessed with curse

Fascinating all toward me

protecting the lord from other's sword

And now became the witness of history

I am "Lalbagh's Fort" and this is my city.


I was Asia's pride

Symbol of accuracy

Uphold excellence of our artistic mind

I am "Mosleen" mother of textile

and this is my city


I trade for you, from you towards the world

Floating with thousands

and connecting all to you

I am crowded "Sadar Ghat" and this is my city.


I colored the nature

Blue to red, green to yellow

I make them "Bangali" in your eyes 

I am "Dhakai saree" and this is my city.


Authors, Readers and Literature

I hold all of three

Tribute to the language and those who love it

I read, I write, I introduce

I'm "Amor Ekushe Boi mela" and this is my city.


I am the biggest occasion of Bangalis' trace

Mixed with Padma ilish and panta

I march for Mangala, the ultimate "Kalyan"

I am "Poyla Bokshak" and this is my city.


I am Dying for you.

my life will be lucky to be sacrificed for you.

I was the lifeline and now my life is lining

I am "Buriganga" and I'm the mother of the city.


I am everything but without you, I'm nothing

I'm the manifest of the country

Shelter of millions, trade house of Asia

Yes, I'm unplanned, blocked with jam

But again that's me who got most attention, most affection

I'm the child of civilization

I was "Zahangirnagar"

and now I am "DHAKA" the city of yours.


 

শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২১

নির্বাচন? না নীড়-বাছন? 🙄

(নির্বাচন রম্য, তাই রম্য হিসেবেই নিয়েন)

কালের চাকা ঘুরে নির্বাচনের পোস্টারে আবার শহর ছেয়ে গেছে। মাসের প্রায় পুরোটুকু জুড়েই বহু প্রচার-প্রচারণা চালালেন প্রার্থীরা, আমিও শুনলাম, দেখলাম। এই শোনা-দেখা থেকে যা উপলব্ধি হলো তা রাখ ঢাক ছাড়াই লিখছি।

(caution: informal & some sensitive, explicit contents ahead)

শুরু থেকেই শুরু করি। সাধারণ মানুষদের চেয়ে প্রার্থীর কাছে নির্বাচন দিন গণনা শুরু হয় বহু আগে থেকে। হয়তো আগের নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই। এরপর দেশের বড় যে দুই দল আছে তাদের মনোনয়ন পেতে শুরু হয় ফাটাফাটি, কাটাকাটি যাকে ফর্মাল ভাষায় তোড়জোড় বলে। সবাই চান কিন্তু কেউ পান, কেউ পান না। এখন দলের মার্কা পাননি তাই বলে তো তার ইচ্ছা থেমে থাকতে পারে না তাই না!? তারাও দাঁড়িয়ে যান! দাঁড়িয়ে যায় তাদের… মার্কা। মাঝে মধ্যেই তারা নিজেদের মধ্যে শারীরিক কসরত করেন, কম্ফু প্র‍্যাকটিস করেন, বাশ দিয়ে ডাঙ্গুলি খেলেন। পরের অলিম্পিকের জন্য ৫০০ মিটার রিলে দৌড়ের প্র‍্যাকটিসও নির্বাচনেই হয়ে যায়। স্পিড (হেব্বি এনার্জি) খেয়ে তারা কিছু পুরাতন চেয়ার টেবিল ভাঙেন (নতুনের আগমনে পুরাতন আসবাবগুলো ভেঙ্গে নির্বাচনের পর পিকনিক খাওয়ার জন্য আরকি)

আপনার মন কি খুব খারাপ? আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন না? নিজকে নিয়ে হতাশ হতাশ লাগে? কনফিডেন্স বাড়াতে মোটিভেশন চান? তাহলে আজই চলে আসুন…

কলিকাতা হারবালে না রে ভাই! মিছিলে মিছিলে গিয়ে যেকোন প্রার্থীকে জিজ্ঞাসা করেন, জয়ের সম্ভাবনা কত? তারপর দেখেন খেলা!

সবাই বলবে, শতভাগ। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমিই জিতব।

যাকে কেউ আজীবনে চিনেও না সেও শতভাগ আত্মবিশ্বাসী। এটা থেকেও না মোটিভেট হইলে আপনার জীবনটাই বৃথা! যান, আপনি গিয়ে কলিকাতা হারবালই খান!

সবার সম্ভাবনা শতভাগ! সম্ভাবনা চ্যাপ্টারটাই ইন্টারমিডিয়েট থেকে তুলে দেওয়া উচিত রে ভাই! আর আরেকটা প্রশ্ন সবাই যদি বলে 'নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমিই জিতব' তাহলে নির্বাচনটা অসুষ্ঠু করে কে?

যাই হোক এরপর ওনারা পোস্টার ছাপান, রাস্তায় লাগান, গলিতে লাগান, দেয়ালে লাগান, বিলবোর্ডে লাগান। সবখানে লাগান। লাগান আর লাগান। লাগাতে লাগাতে ভরে ফেলেন। সূর্যও ফুটা খুজে পায় না সে কই ঢুকাবে? আরে আলোক রশ্মির কথা বললাম রে ভাই! 😐

এরপর দ্বিতীয় ধাপে আসি। এই ধাপেই শুরু হয় কানের উপর অত্যাচার। মমতাজের ফাইটা যায় থেকে শুরু করে অপরাধী রে পর্যন্ত যত গান আছে, সবগুলাই চলে! দুপুরে চলে, বিকালে চলে, রাতে চলে না, দৌড়ায়। উথাল পাথাল গান, চমকে দেয় প্রাণ! অতি সুরেলা ভোজপুরী ইন্ড্রাস্ট্রির পদ্মশ্রী প্রাপ্ত কিছু গায়ক-গায়িকা আছেন তারাই এই গুরুভার নেন আরকি। এনারা সবাই প্রতিববছর গ্র‍্যামি এওয়ার্ডে নমিনেশন পান, কিন্তু একটুর জন্যেই মিস হয়ে যায় বারবার। কিছুক্ষেত্রে শোনা যায় এ. আর. রহমান নাকি এদের টিউন কপি করছিলো।

সব প্রার্থীর গানগুলো মুখস্ত হয়ে যায় বুঝলেন, কমপক্ষে ২০০-৩০০ বার তো শোনা হয়ে যায় তো। রাতে স্বপ্নেও সেগুলো বাজতে থাকে। এখন অনেকে বলবে স্বপ্ন এগুলো বাজা কি দোষ!? না রে ভাই, দোষ না, এটা তো রহমত! আল্লাহর খাস রহমত! কাল তো নির্বাচন। কালকের পর আর গান বাজবে না। খুব মিস করবো। ভাবতেই বুকের ভেতরটা খা খা করে উঠলো। শহরটা কি ফাকা ফাকা - নির্জন লাগবে। ভাবেন তো একবার বসের সাথে কথা বলতেছি আর ব্যাকগ্রাউণ্ড মিউজিক নাই- ধুম মাচালে, ধুম মাচালে ধুম, ভোট দে রে ভোট দে রে ভোট্টট্ট! এই বেদনাতেই গানগুলো রেকর্ড করে রেখেছি। পরের ৫ বছর শুনবো। ডিপ্রেশন কেটে যাবে ইনশাল্লাহ!

এরপর তৃতীয় ধাপ। এই ধাপে প্রার্থী বাসায় আসেন। অনেক প্রতিশ্রুতি দেন। তা সব ঠিক আছে কিন্তু মজার ব্যাপার কি জানেন? কিছুক্ষণ পর আরেক প্রার্থী আসেন, ওনার প্রতিশ্রুতিগুলোও হুবহু এক হয়। সবার প্রতিশ্রুতি এক, বাক্য এক, খালি বলার মানুষগুলা আলাদা! এমনটা তো স্কুলে হতো আমাদের। এক বেঞ্চের সবার Load Shedding প্যারাগ্রাফ লাইন টু লাইন এক, খালি হাতের লেখা আলাদা। ৪টা খাতা যখন স্যার দেখতেন তখন মার্কও আসতো ৪ রকম। কারণ? হাতের লেখা! নির্বাচনেও হয়তো আমাদের শ্রদ্ধেয় ভোটারগণ এভাবেই ভোট দিয়ে থাকবেন। মুখে যার হাসি, তাকেই ভালোবাসি।😎

চতুর্থ ধাপ নির্বাচনের দিনে আসে। উড়াধুরা বাশ কাটা হয় আগের দিন। কামাররা তো মনে হয় কোন ফুসরতই পায় না! কে জানে..

মারামারি না হলেও প্রস্তুতি থাকেই সব নির্বাচনে। মাঝে মধ্যে হয়ও। সেই লাগে দেখতে! হলিউড বলিউড ফেইল! কই যেন শুনছি জন উইক নাকি এখান থেকেই মারামারির মুভস কপি করছে। 

এরপর যে মার খেয়ে হারে তার ভাষ্যও প্রস্তর যুগ থেকে কেন জানি এক- এ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। বাশ পাতি মারামারির পর বেচে গেলে পিজাইটিং অফিসারের উপর হালকা চলে আরকি! কর্মীগণ পুরাতন প্যান্ট শার্ট দেখলে ছিড়ে দেন একটু। পিজাইটিং অফিসার আর পুরাতন ড্রেস পরবে, এ হতেই পারে না। কী জনদরদি প্রার্থী রে বাবা! এ সময় বীর পুলিশগণ ঘটনা স্থল থেকে সটকে পাশের দোকানে ফ্রি জিলাপি খান। ভাঙ্গচুর শেষ হলেই তারা যান এবং সাংবাদিকদের বলেন- পুলিশের আন্তরিক চেষ্টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তবে সবসময় এমন হয় না। মাঝে মাঝে পুলিশ সত্যিই প্রশংসনীয়ভাবে পরিস্থিতি সামলায়। No offence here.

দীর্ঘ মারামারি মারামারি খেলার পর যে জয়ী হয় সেই আসলে জয়ী হয়। জোর যার, ভোট তার 

তারপর শুরু হয় উন্নয়নের অগ্রযাত্রা…

যেগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেগুলো লিস্ট ধরে ধরে স্কিপ করে অন্যসব কাজ করেন কেউ কেউ (সবাই নয়, অনেকে সত্যতই আদর্শবান ও যোগ্য)। যেই লোক ভোটারদের হাতে পায়ে ধরতো, সেই লোকের হাতে পায়ে ধরেও সাহায্য পান না অনেকে। কারণ? কারণ আর কি রে ভাই!? তারা এখন গদিতে। ৫ বছর নিশ্চিন্ত! আসছে নির্বাচনে আবার যাদের হাতে পায়ে ধরবেন, এখন তারা একটু হাতে পায়ে ধরুক না, ক্ষতি কি! উনি যে ভোট কিনেছেন, নির্বাচনে ৫ কোটি খসিয়েছেন, তা উসুল করতে হবে না? এই ৫ কোটি আর পরের নির্বাচনের জন্য ১০ কোটি উনি আগেই উন্নয়ন খাত থেকে আলাদা করে রাখেন, চ্যালা-চামুন্দা পোষেন তাদের দেন। আর মন খুব ভালো থাকলে আমাদের সরকারি ট্যাক্সের টাকায় কিছু রাস্তা হয়তো মেরামত করেন, কিছু বানানও বটে। তবে তা শুধুই পরের ভোটে এ করেছি, সে করেছি দেখানোর জন্য। নির্বাচনে জেতা মুখের কথা, কত্ত পরিশ্রম, কত্ত ধকল যায় সেগুলোরই পারিশ্রমিক নেন উনি। খবরদার এটাকে টাকা মারা বলেছেন তো! বলুন পারিশ্রমিক! আর আমাদের জনগণও তো খুশিই! 'ঝন্টু ভাইয়েততে ৫০০, মন্টু ভাইয়েততে ৭০০। ভোটটা হারা মন্টু ভাইকি দিমো।' 'ভোটটা দেবার সময় টাকাটাই দেখা উচিত, মাইকে চরিত্র সবার ফুলের মতোই পবিত্র হয়!' সে তো ১২০০ পেয়ে হেব্বি খুশি। কিন্তু সে জানে না তার বাড়ির সামনের ভাঙ্গা রাস্তা মেরামতের একটা অংশ তার পকেটে ঢুকলো। পরে এই ভাঙ্গা রাস্তায় পড়ে তার ভাঙ্গা পায়ের পিছনে ১২০০০ টাকা চলে যাবে! উফ! কি লাভে লাভ! ইটস ১০০% লাভ! যাই হোক এসবের মাঝেও কিছু সৎ মানুষ আছেন যাদের আসল উদ্দেশ্য সেবা করা তাদের জন্যই হয়তো বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে উন্নত হয়েছে। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখা শেষ করছি! 

(সৃজনশীল কল্পনাপ্রসূত লেখনী)

(কাওকে সরাসরি কটাক্ষ না করায় বাংলাদেশ সংবিধানের স্বাধীন মত প্রকাশ বিধিমালা (৩৯ তম অনুচ্ছেদ) অনুযায়ী আমার লেখাটি আইনসঙ্গত। কেউ ফাসি চেয়ে লজ্জা দিবেন না)

বুধবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২১

সীমা লঙ্ঘন

এই মেয়েটা এখানে কেন? এতদূর থেকে এসেছে? এতটাই টান ছিল! বাসায় কি ও বলে এসেছে! আর অলকের মা জানে ও কে? অলকের মা হয়তো জানে মেয়েটা অলকের প্রেমিকা। হয়তো অলক নিজেই বলেছিলো। নাহ! মনে হয় জানে না। জানলে ও এমন অপরিচিতের মতো বাইরে দাঁড়িয়ে উঁকি ঝুকি দিতো না। আন্টির কাছেই সরাসরি যেত। আমার কি মেয়েটার কাছে যাওয়া উচিত? সান্ত্বনা দেওয়া উচিত? ওর সাথে একটু কথা বলে যদি ওর মনটা একটু হালকা হয়। যাবো? কিন্তু ওদিকে তো অনেক ভীড়! এসব আজগুবি কল্পনা ছেড়ে পাশে এসে দাড়ালাম মেয়েটার। “আমি আপনাকে চিনি। ছবিতে দেখেছি। অলক আপনার কথা প্রায়ই বলতো। বিকেল তো হয়ে আসলো, বাসায় ফিরবেন না? ধীর লয়ে, মিনমিনে উত্তর পেলাম “বাসায় যাওয়ার আর মুখ নেই।” “যুক্তি দিয়ে ভাবুন। আপনার উপস্থিতি এখানকার পরিস্থিতি বদলাবে না। চলুন, আমি আপনাকে বাসে তুলে দিচ্ছি।” মেয়েটি আমার কথা শুনলো। টিকেট ভাড়া মেয়েটির ছিলো না; আমি টিকেট কেটে দিতে চাইলাম। কিন্তু সে তাতে না করে বললো, দু হাজার টাকা ধার দিতে পারবেন? বাস আসলো, মেয়েটিকে উঠিয়ে দিয়ে আবার অলকের বাসায় আসলাম। ইতোমধ্যে আমার পরিচিত কিছু বন্ধুও এসেছে। ওদের নিয়ে স্কুলের নদীর পাশটায় বসলাম। কেউ কথা বলার কিছু পাচ্ছে না। সিফাত হঠাৎ প্রশ্ন তুললো, পুলিশ তো এসছিলো, মৃত্যুর কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে? সাকিব বললো, “ওরা কি আর অফিশিয়ালি এগুলো বলবে? পুরো ব্যাপারটা বলি শোন, আন্টি দিনাজপুরে গেছিলো। বাসায় তো কেউ ছিলো না। আর খুনটাও দেখ অন্যরকম। আমাদের সবাইকে অলকের সিম দিয়েই মেসেজ করা হলো Alok's dead! রহস্যজনক না? আমি তো প্রথমে ভেবেইছিলাম অলক প্রাংক করছে। পরে তোরা কল দিলি, তোদেরও একই মেসেজ দিয়েছে। তখনই তড়িঘড়ি করে অলকের বাসায় গেলাম। আমরা সবাই মিলেই তো দেখলাম, রুমটা খুব সুন্দর করে সাজানো, গোলাপ ফুল! লাইটিং! ক্যান্ডেলস! সামনেই একটা কেক। কেটে খাওয়াও হয়ে গেছে। আর অলক? অলক পুরো নগ্ন, চিৎ হয়ে বিছানায়, বুকে কেক কাটার চাকু। শুধু চাকু মেরে খুন হলে তো হতোই। কিন্তু এই খুনি তো হাতের দশ আঙ্গুলও তো এক এক করে কেটে আলাদা করে দিয়েছে, আর নুনুটাও তো পুরো বিচ্ছিন্ন করেছে। তা দেখতেই তো পাড়ার লোকে বাড়ি গিজগিজ করছিলো। পুলিশকে ফোন দিলাম, আন্টিকেও জানালাম। আন্টির কন্ডিশনটা চিন্তা করতে পারছিস! কি ব্রুটাল খুন?” কেউ একজন বললো, অলকের সেভাবে কোন শত্রু ছিলো না। আর ধর্ষণ-টর্ষণ কেসও তো নেই যে ধর্ষিতা… নিস্তব্ধ হয়ে শুনছিলাম তবে শেষ কথাটায় আমার মাথা ঝিম মেরে এলো। আমি আমার বন্ধুর খুনিকেই….? পুলিশ জবানবন্দি যখন নেবে তখন কি আমার বলা উচিত আমার সন্দেহের কথাটা? আমার এতো ভালো বন্ধুকে যে খুন করেছে তাকে ছেড়ে দেবো? পরক্ষণেই মনে হলো, আমার মৌনতাই হয়তো মৃত অলকের সম্মান আর মেয়েটির জীবন বাঁচাবে। যে অলককে সবাই আদর্শ ধরে, আর মৃত্যুর পর তাকেই সবাই ধর্ষক হিসেবে চিনবে? অলকের মা হয়তো ছেলে হত্যার বিচার পাবে তবে সে বিচারে কি শান্তি পাবে? উনিও কি আজীবন লজ্জায় অলকের এই পরিচয়টা লুকিয়ে রাখবে না? আলোচনা থেকে উঠে এলাম। নদীর পাড়টা ধরে হাটছি। বিবেক আর মন আলাদা কথা বলছে। কিছু তো মিলছে না। বুঝতেই পারছি না কী করা উচিত, কী না! সূর্য অস্ত যাচ্ছে। লাল হয়ে সূর্য তার শেষ রশ্মিটাও আমার দিকে ছুড়ে দিলো। আমি যেন সেই রশ্মি দ্বারা বজ্রাহত হলাম। আগুন লেগে গেল শরীরে। কেন যে মানুষ সঙ্গম আর ধর্ষণের সূক্ষ্ম সীমা বোঝে না। কেন?


(কলাবাগানের ঘটনাটা এমন হলে হয়তো ভালো হতো। আর হ্যাঁ, অলকসহ সব চরিত্রগুলো কাল্পনিক)


শনিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২১

শীতসন্ধ্যা

আমার নিশ্চল জানালায় সীমাহীন আকাশ পড়ে ছিল,

পড়ে ছিল শীতের প্রশান্ত রোদ্দুর।

অল্প ভেজা আকাশের দিকে তাকিয়ে আমি মুগ্ধ হতাম,

মুগ্ধ হতাম গাছের বাদামি পাতার বিচ্ছুরণ দেখে 

একের পর এক,

সারির পর সারি,

গুচ্ছের পর গুচ্ছ;

এটা নিতান্তই ওদের খেলা নয় , নয় শুধু স্থানন্তর 

ওরা যেন উড়ে চলে ; ঘুরে চলে 

আনবে বলে যুগান্তর ।

জানালা থেকে হাত বাড়ালেই ওরা আমাকে স্পর্শ করত 

বলত, শেষবেলার অতিথি পাখির গল্প।

তার আবেগে দলছুট পাখি ছানার কান্না আমার কানে বাজত ।

হয়ত লম-বা তালগাছটা তার মা’কে খুঁজে দিতো ।


যখন ফেরিওয়ালার হাক ই নয় বরং তার হৃদস্পন্দনও শোনা যায়

তখন বাড়ির ছোট্ট মেয়েটিও বেরিয়ে পড়ে 

কিছু অপ্রয়োজনীয় জিনিসের খোজে 

হয়তো বা তার ছোট্ট ভাইটির জন্যে একটা পুতুল কেনে 

পুতুল খেলা তার বড্ড শখ

আর বড় ভাইয়ের জন্যে ?

সে মনে করে মোয়া কিনে রাখে 

মা বলেছেঃ সে ইস্কুলে পড়ে , অন-নেক বুদ্ধি

নদীর ঐপারে

কতক সঙ্গী সহিত দুরন্তেরা

জেলের মাছ ধরা দেখছে,

মরা নদীর গর্ভ থেকে শেষ পানিটুক 

নিঙড়িয়ে চলছে মাছ ধরার খেলা

খেলায় বাদ যায় নি খুকির বড় ভাই

বিকেল যখন আর একটু ভারী হয়ে আসে 

বাতাস যখন পথের ধুলোকে উড়িয়ে নিয়ে যায়

তখন মাঠ ওদের ডাকে।

বলেঃ “কিরে আয় , বেলা তো আর নেই”


জানি না দেখেছো কিনা 

লালচে সূর্য যখন মাঠের উপর পড়ে 

তখন ধানের জমিগুলোর 

আ’ল সবচেয়ে ধূসর লাগে

লোকে ধূসর রঙ ওড়ায়, কাজে যায়

আবার ধূসর রঙ ওড়ায়, ঘরে ফেরে

কিন্তু সে রঙ কখনো যায় না 

এটি এমন এক সীমাহীন সময় যেখানে 

রাত নামলেও জীবন ফুরায় না 

রাস্তার কোন এক বাঁকে এক দরিদ্রা 

ভাপা বানাতে বসে

ঊফ! ধোয়া ওঠা ভাপা 

কোন এক ক্লান্ত বাবা ভাপা কিনতে আসে 

তার ঘরের ঘুমন্ত শিশুটির জন্যে

হয়ত কোনদিন কেউ আসে না ,

কিন্তু বুড়ি তার ছ’বছরের নাতনিকে নিয়ে

ভাপা বানাতেই থাকে , বানাতেই থাকে 

যতক্ষণ না তাদের রক্তমূল্য সম পোলাও চালের 

আটা আর আগুনটা আছে 

কুয়াশার শুভ্রতায় কালো কুকুরটার গা যখন 

মুক্তোর মতো জ্বলতে থাকে 

তখন বুড়ি তার জীবনদ্বীপের প্রজ্জ্বলিত 

আশা দেখতে পায় 

ভাবছো, কেমন করে জানি এসব গল্প ?

আহা! এসব তো আমাদের চিরচেনা গল্প

তাকিয়ে দেখ তুমিও এক বুড়িকে পাবে-

যাকে নিয়ে লেখার মতো কয়েকটি 

আঁচড় ছাড়া তুমি কিছু পাবে না।

লেখা: রুহান

২০১৮ এর কোন একদিন